নয়াদিল্লির একটি হাসপাতালে চলছে করোনা রোগীর চিকিৎসা। দেশটির হাসপাতালগুলোতে এখন অক্সিজেনের ব্যাপক ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
চিকিৎসা চলাকালে অক্সিজেনের সরবরাহ কমে যাওয়ায় ২৪ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ২৩ জনই কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত ছিলেন।
গতকাল রোববার রাতে কর্ণাটক রাজ্যের দক্ষিণাঞ্চলে চামারাজানগর জেলায় একটি সরকারি হাসপাতালে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। হাসপাতালটিতে অন্তত ১৪৪ জন রোগীর চিকিৎসা চলছে। রাজ্য সরকার ঘটনাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। আজ সোমবার ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির খবরে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে ২৩ এপ্রিল রাতে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির একটি হাসপাতালে কোভিড-১৯ রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহে ঘাটতির কারণে ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। তারও দুই দিন আগে মহারাষ্ট্র রাজ্যের নাসিক শহরে জাকির হুসেইন মিউনিসিপ্যাল হাসপাতালের অক্সিজেন ট্যাংকে ছিদ্র হওয়ায় প্রায় ৩০ মিনিট নিরবচ্ছিন্ন অক্সিজেন সরবরাহে বিঘ্ন ঘটেছিল। তাতেই ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ২২ জন কোভিড-১৯ রোগীর মৃত্যু হয়।
ছেলে হারানো এক বাবা লোকেস বলেন, ‘আমার ছেলে ৭৫ ভাগ সুস্থ হয়ে উঠেছিল। কিন্তু সেখানে যদি অক্সিজেন সিলিন্ডার থাকত, তাহলে হয়তো ছেলেটা বেঁচে যেত।’
রাজান্না নামের আরেকজন হারিয়েছেন ভাইয়ের ছেলেকে। মধ্যরাতে ভাতিজা তাঁকে ফোন করে সাহায্য চেয়েছিলেন। রাজান্না বলেন, রাত ‘প্রায় ১২টা হবে। আমাকে ফোন দিয়ে বলল এখানে অক্সিজেন নেই। দয়া করে দেখো কী করতে পারো! আমরা তাৎক্ষণিক হাসপাতালে ছুটে আসি। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের কাউকে ভেতরে যেতে দিল না। আমরা যখন তাকে ফোন দিলাম, কেউ ধরল না। তার মানে সে ততক্ষণে আমাদের থেকে অনেক দূরে। অক্সিজেনের অভাবে সে মারা গেল।’
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদিউরপ্পা এই ২৩ রোগীর মৃত্যুর কারণ তদন্ত আইএএস কর্মকর্তা শিবায়োগি কালাসাদকে দায়িত্ব দিয়েছেন। তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এ ঘটনায় মাইসুরির এমপি প্রতাম সিমহা বলেন, ‘গত রাতে চামারাজানগর জেলায় অক্সিজেনের ঘাটতির বিষয়টি যখন গণমাধ্যমকর্মীরা আমার নজরে আনেন, আমি তখন নিজে থেকে ডেপুটি কমিশনার ড. এমআর রবির সঙ্গে যোগাযোগ করি এবং অক্সিজেনের দায়িত্বে থাকা এডিসির সঙ্গে কনফারেন্স কলে যুক্ত হই। রাতেই সাউদার্ন গ্যাস ১৫টি সিলিন্ডার দিয়ে যায়। এর আগে আমাদের কাছে যা ছিল, সেখান থেকেও দিয়েছি। এত কিছুর পরও এ দুর্ঘটনা ঘটল। চামারাজানগর আমাদের থেকে খুব বেশি দূরে নয়। এই জেলাকে আমরা আমাদেরই অংশ মনে করি। আমরাও এ দুঃখের অংশীদার।’
No comments:
Post a Comment